হিজাযের নেতৃত্ব (الإِمَارَةُ بِالْحِيْرَةِ) Leadership of Hijaz

 এটা সর্বজনিতবিদিত বিষয় যে, মক্কায় জনবসতির সূত্রপাত হয় ইসমাঈল (আঃ)-এর মক্কাবাস থেকে, অতঃপর ১৩৭ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি জীবিত[1] থাকেন এবং আজীবন...

 এটা সর্বজনিতবিদিত বিষয় যে, মক্কায় জনবসতির সূত্রপাত হয় ইসমাঈল (আঃ)-এর মক্কাবাস থেকে, অতঃপর ১৩৭ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি জীবিত[1] থাকেন এবং আজীবন মক্কাবাসীগণের সর্দার ও বায়তুল্লাহ শরীফের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন[2]। তাঁর ওফাত প্রাপ্তির পর তাঁর এক সন্তান মক্কার অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। কেউ বলেন, দু’সন্তানই- প্রথমে নাবিত্ব ও পরে ক্বায়দার মক্কার অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। আবার কেউ এর বিপরীতও বলেছেন। তারপর তাঁর নানা মুযায বিন ‘আমর জুরহুমী রাজ্যের শাসনভার নিজ হাতে গ্রহণ করেন। এভাবে মক্কার নেতৃত্ব বনু জুরহুম গোত্রের হাতে চলে যায় এবং এক যুগ পর্যন্ত তা তাঁদের হাতের মুঠোর মধ্যেই থাকে। যেহেতু ইসমাঈল (আঃ) পিতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বায়তুল্লাহ শরীফের নির্মাণ কাজ করেছিলেন, সেইহেতু তাঁর সন্তানাদি বিশেষ এক মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত থাকেন। যদিও নেতৃত্ব কিংবা অধিকার লাভে তাঁদের কোন অংশীদারিত্ব ছিল না[3]।

তারপর দিনের পর দিন এবং বৎসরের পর বৎসর অতিবাহিত হতে থাকল। কিন্তু ইসমাঈল (আঃ) সন্তানগণ যেন মাতৃগর্ভেই রয়ে গেলেন। জনসমাজে তাঁরা অজ্ঞাত অখ্যাতই রয়ে গেলেন। পক্ষান্তরে বুখতুনসসরের খ্যাতি প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব মূহুর্তে বনু জুরহুম গোত্রের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মক্কার আকাশে আদনানীদের রাজনৈতিক নক্ষত্রের দ্যুতি চমকাতে আরম্ভ করে। এর প্রমাণ হচ্ছে, বুখতুনসসর জাতে ‘ইরক্ব নামে স্থানে আরবদের সঙ্গে যে ভীষণ লড়াই করেছিলেন তাতে আরব সৈন্যদের সেনাপতি জুরহুমী ছিলেন না[4] বরং স্বয়ং আদনান ছিলেন সেনাপতি।

খ্রীষ্টপূর্ব ৫৮৭ অব্দে বুখতুনসসর আবার যখন মক্কা আক্রমণ করেন তখন আদনানীগণ পলায়ন করে ইয়ামান চলে যান। সেই সময় ইয়ারমিয়াহ অধিবাসী বারখিয়া যিনি বনি ইসরাঈলগণের নাবী ছিলেন তিনি আদনানের সন্তান মা’আদ্দকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে শাম দেশের হার্রানে চলে যান এবং বুখতুনসসরের প্রভাব বিলুপ্ত হয়ে গেলে মা’আদ্দ পুনরায় মক্কায় ফিরে আসেন। মক্কায় প্রত্যাবর্তনের পর জুরহুম গোত্রের মাত্র এক জনের সঙ্গেই তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তিনি ছিলেন জাওহাম বিন জালহামাহ। মা’আদ্দ তাঁর কন্যা মুয়া‘নাহকে বিবাহ করেন। তাঁর গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণ করেন নিযার[5]।

এরপর থেকে মক্কায় জুরহুম গোত্রের অবস্থা খুব খারাপ হতে থাকে। তাঁদেরকে প্রকট অসচ্ছলতার মধ্যে নিপতিত হতে হয়। ফলে তাঁরা বায়তুল্লাহর হজ্বতীর্থ যাত্রীদের উপর নানা প্রকার অন্যায় উৎপীড়ন শুরু করে দেয়। খানায়ে ক্বাবা’হহর অর্থ আত্মসাৎ করতেও তাঁরা কোন প্রকার দ্বিধাবোধ করেন না[6]।

এদিকে বনু আদনান গোত্র তাঁদের এ জাতীয় কর্মকান্ডের উপর গোপনে গোপনে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে থাকেন এবং তাঁদের উপর ভয়ানক ক্ষুব্ধ ও কুপিত হয়ে উঠেন। তাই, যখন বনু খুযা’আহ গোত্র মারুয যাহরানে শিবির স্থাপন করেন এবং লক্ষ্য করেন যে বনু আদনান গোত্র বনু জুরহুমকে ঘৃণার চোখে দেখছেন তখন এ সুযোগ গ্রহণ করে এক আদনানী গোত্রকে (বনু বাকর বিন আবদে মানাফ বিন কিনানাহ) সঙ্গে নিয়ে বুন জুরহুম গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরম্ভ করে দেন এবং মক্কা থেকে তাঁদেরকে বিতাড়িত করে ক্ষমতা দখল করে নেন। এ ঘটনাটি ঘটে দ্বিতীয় খ্রীষ্ট শতাব্দীর মধ্য ভাগে।

বনু জুরহুম গোত্র মক্কা ছেড়ে যাবার সময় যমযম কূপের মধ্যে নানা প্রকার জিনিসপত্র নিক্ষেপ করে তা প্রায় ভরাট করে ফেলেন। যে সব জিনিসপত্র তাঁরা যমযম কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করেন, তার মধ্যে ছিল কিছু সংখ্যক ঐতিহাসিক নিদর্শন। মুহাম্মাদ বিন ইসহাক্বের বিবরণ মতে ‘আমর বিন হারিস বিন মুযায জুরহুমী[7] খানায়ে ক্বাবা’হর দুটি হরিণ,[8] কর্ণারে গ্রোথিত পাথরটি (হাজারে আসওয়াদ বা কালোপাথর) বাহির করে নিয়ে তা কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করেন। তারপর নিজ গোত্র বনু জুরহুমকে সঙ্গে নিয়ে ইয়ামানে চলে যান। মক্কা হতে বহিস্কার এবং সেখানকার রাজত্ব শেষ হওয়ার কারণে তাঁদের দুঃখের অন্ত ছিল না। এ প্রেক্ষিতেই ‘আমর নীচের কবিতাটি আবৃত্তি করেন,

كأن لم يكن بين الحَجُوْن إلى الصَّفَا

**

أنيـس ولـم يَسْمُـر بمكـــة سامـــر

بلــى نحــن كــنا أهـلــها فأبـادنـا

** 

صُرُوْف الليالى والجُدُوْد العَوَاثِر [9]

‘হাজূন থেকে সাফা পর্যন্ত নিশিতে গল্প বলার কেউ ছিল না, কেন নেই? আমরাতো এরই অধিবাসী, সময়ের পরিবর্তনে আজ আমরা ভাগ্যাহত, হায়, আমাদের সর্বহারা বানিয়ে দিয়েছে’

ইসমাঈল (আঃ)-এর যুগ ছিল যীশু খ্রীষ্টের জন্মের আনুমানিক দু’হাজার বছর পূর্বে। সেই হিসেবে মক্কায় জুরহুম গোত্রের অস্তিত্ব ছিল প্রায় দু’হাজার একশত বছর পর্যন্ত এবং তাঁদের রাজত্ব কাল ছিল প্রায় দু’হাজার বছর পর্যন্ত।

মক্কার উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর বনু বাকরকে প্রশাসনিক দায়-দায়িবতে অন্তর্ভুক্ত না করেই বুন খুযা’আহ এককভাবে প্রশাসন পরিচালনা করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিশেষভাবে উল্লে­খযোগ্য এবং মর্যাদাসম্পন্ন তিনটি পদের অংশীদারিত্ব বনু মুযার গোত্র লাভ করেছিলেন। পদগুলো হচ্ছে যথাক্রমে নিম্নরূপ:

১. হাজীদের আরাফা থেকে মুজাদালেফায় নিয়ে যাওয়া এবং ইয়াওমুন নাফার অর্থাৎ ১৩ই (যিলহজ্জের শেষ দিন) মিনা থেকে রওয়ানা হওয়ার জন্য হাজীদের লিখিত আদেশ প্রদান। এ সম্মানের অধিকারী ছিলেন ইলিয়াস বিন মুযার বংশধরের মধ্যে বনি গাওস বিন মুররাহ যাদের বলা হতো ‘সূফাহ’। এ মর্যাদার ব্যাখ্যা হচ্ছে, ১৩ই জিলহজ্জ তারিখে যতক্ষণ না সুফাহর কোন একজন লোক সকলের আগে কংকর নিক্ষেপ কাজ সম্পন্ন করতেন ততক্ষণ হজ্জযাত্রীগণ কংকর নিক্ষেপ করতে পারতেন না। অধিকন্তু, হজ্জযাত্রীগণ যখন কংকর নিক্ষেপ কাজ সম্পন্ন করতেন এবং মিনা হতে রওয়ানা হওয়ার ইচ্ছা করতেন তখন সুফাহর লোকেরা মিনার একমাত্র পথ ‘আক্বাবাহর দু’পাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং যতক্ষণ না তাঁদের সকলের যাওয়া শেষ হতো ততক্ষণ সেই পথে অন্যদেরকে যেতে দেয়া হতো না। তাঁদের চলে যাওয়ার পর অন্যান্য লোকদের জন্য পথ ছেড়ে দেয়া হতো। যখন সুফাহ বিদায় নিল তখন এ সম্মান বনু তামীমের এক পরিবার বনু সা’দ বিন যায়দ মানাতের অনুকূলে গেল।

২. ১০ই জিলহজ্জ্ব তারিখ ‘ইফাজাহর জন্য’ সকালে মুজদালেফা থেকে মিনার দিকে যাত্রা করার ব্যাপারটি ছিল বনু আদওয়ানের এখতিয়ার্ভুক্ত এক মহা সম্মানের প্রতীক।

৩. হারাম মাসগুলোকে এগিয়ে নিয়ে আসা কিংবা পেছিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি ছিল উচ্চ সম্মানের প্রতীক। এ সম্মানের ব্যাপারটি ছিল বনু কিনানাহ গোত্রের অন্যতম শাখা বনু ফুক্বাইম বিন আদীর এখতিয়ার্ভুক্ত[10]।

মক্কার উপর বনু খুযা’আহ গোত্রের কর্তৃত্ব প্রায় তিনশত বছর যাবৎ প্রতিষ্ঠিত ছিল[11]। এ সময়ের মধ্যে আদনানী গোত্রসমূহ মক্কা এবং হিজায সীমান্ত অতিক্রম করে নাজদ, ইরক, বাহরাইন ইত্যাদি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন। মক্কার আশপাশে কেবলমাত্র কুরাইশদের কয়েকটি শাখা অবশিষ্ট ছিল। তারা হলেন, ‘হুলূল’ ও ‘সিরম’। অবশ্য এদের ঘরবাড়ি বলতে তেমন কিছুই ছিল না। ছড়ানো ছিটানো এবং বিচ্ছিন্ন অবস্থায় এরা ভিন্ন ভিন্ন পাড়ায় বসবাস করতেন। বনু কিনানাহ গোত্রের মধ্যেও বিক্ষিপ্ত অবস্থায় তাদের কয়েকটি ঘড়বাড়ি ছিল। কিন্তু মক্কার প্রশাসন কিংবা বায়তুল্লাহর অভিভাবকত্বে তাঁদের কোন অংশ ছিল না। এমন এক সময়ে কুসাই বিন কিলাব গোত্র আত্মপ্রকাশ করে[12]।

কুসাই সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তিনি যখন মায়ের কোলে ছিলেন তখন তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। এরপর তাঁর মা বনু উযরা গোত্রের রাবী’আহ বিন হারাম নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যান। এ গোত্র শাম রাজ্যের কোন এক অঞ্চলে বসবাস করত। কাজেই কুসাইয়ের মা কুসাইকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে চলে যান। বয়োঃপ্রাপ্তির পর কুসাই মক্কায় ফিরে আসেন। সেই সময় খুযা’য়ী গোত্রের হুলাইল বিন হাবশিয়া খুযা’য়ী ছিলেন মক্কার অভিভাবক। কুসাই হুলাইল কন্যা হুব্বাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে তিনি তা মঞ্জুর করেন এবং উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যান[13]। এর কিছু দিন পর হুলাইল মৃত্যু মুখে পতিত হলে মক্কা এবং বায়তুল্লাহর অভিভাবকত্ব নিয়ে খুযা’আহ এবং কুরাইশদের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধোত্তর মক্কায় কুসাইরা হয়ে উঠেন মধ্যমণি। মক্কা এবং বায়তুল্লাহর অভিভাকত্ব অর্পিত হয় তাঁরই হাতে।

খুযা’আহ এবং কুরাইশদের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের কারণ সম্পর্কে তিন ধরণের বর্ণনা পাওয়া যায়। এর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে, যখন কুসাইয়ের সন্তানাদি খুব উন্নতি লাভ করল, তাঁদের হাতে সম্পদের প্রাচুর্য পরিলক্ষিত হল এবং মান-সম্মানও বৃদ্ধি পেতে লাগল এবং এ দিকে হুলাইল যখন মৃত্যুবরণ করলেন তখন কুসাই এটা উপলব্ধি করলেন যে, মক্কার প্রশাসন এবং ক্বাবা’হর অভিভাবকত্বের ব্যাপারে বনু খুযা’আহ ও বকরের তুলনায় তার দাবীই অগ্রাধিকারযোগ্য। তিনি এ ধারণাও পোষণ করতে থাকলেন যে কুরাইশগণ হচ্ছেন ইসমাঈলীয় বংশোদ্ভুত খাঁটি আরব এবং ইসামাঈলীয় বংশের অন্যান্যদের সরদার।

এ প্রেক্ষিতে তিনি কুরাইশ এবং বনু কেননার কিছু সংখ্যক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির সঙ্গে এ মর্মে আলাপ-আলোচনা করেন যে, কেন বনু বাকর এবং বনু খুযা’আহকে মক্কা থেকে বহিস্কার করা হবে না? আলোচনায় অংশগ্রহণকারীগণ এ ব্যাপারে তাঁর মতের সঙ্গে অভিন্নমত পোষণ করেন[14]।

দ্বিতীয় বিবরণ হচ্ছে, বনু খুযা’আহর কথানুযায়ী হুলাইল নিজেই কুসাইকে অসীয়ত করেন যে, তিনিই মক্কার শাসনভার গ্রহণ করবেন এবং ক্বাবা’হর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু খুযা’আহ এ সম্মানজনক পদে কুসাইকে অধিষ্ঠিত করতে অস্বীকার করলে উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে[15]।

তৃতীয় বিবরণ হচ্ছে, হুলাইল তাঁর কন্যা হুব্বার হাতে বায়তুল্লাহর অভিভাবকত্ব ন্যস্ত করেন এবং আবূ গুবশান খুযা’য়ীকে তাঁর প্রতিনিধি নিযুক্ত করেন। হুব্বার প্রতিনিধি হিসেবে আবূ গুবশান খুযা’য়ীই হয়ে যান ক্বাবা’হর দায়িত্বশীল ব্যক্তি। এ দিকে হুলাইল যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন কুসাই এক মশক মদের বিনিময় আবূ গিবশানের নিকট থেকে ক্বাবা’হর অভিভাবকত্ব ক্রয় করে নেন। কিন্তু খুযা’আহ সম্প্রদায় এ জাতীয় ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারটি অনুমোদন না করে বায়তুল্লার ব্যাপারে কুসাইকে বাধা প্রদান করতে থাকেন। কুসাইও কিন্তু ছাড়বার পাত্র নন। বনু খুযা’আহকে মক্কা থেকে বহিস্কার করার মানসে কুরাইশ এবং বনু কিনানাহকে একত্রিত করে তাঁদের সহায়তা লাভের জন্য আবেদন জানালেন। কুসাইয়ের আহবানে সাড়া দিয়ে তাঁরাও একাত্মতা ঘোষণা করলেন।[16]

কারণ যাই হোক না কেন, ঘটনার রূপটি ঠিক এ রকম ছিল যে, হুলাইল যখন মৃত্যুবরণ করলেন সুফা তখন তাই করতে চাইলেন যা তিনি সর্বদা করে আসছিলেন। কুসাই তখন কুরাইশ এবং কিনানাহর লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে ‘আক্বাবাহর যে স্থানে তাঁরা সম্মিলিত হয়েছিলেন সেখানে উপস্থিত হয়ে বললেন যে, ‘খানায়ে ক্বাবা’হর অভিভাবকত্বের জন্য তোমাদের তুলনায় আমরা অধিকতর যোগ্য এবং আমাদের দাবী অগ্রগণ্য।’

কিন্তু কুসাইয়ের কথায় কর্ণপাত না করে তাঁরা যুদ্ধ ঘোষণা করে বসলেন। এ যুদ্ধে কুসাই তাঁদের পরাজিত করে তাঁর ইপ্সিত মান-মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেন। এ দিকে কুসাই এবং সুফার মধ্যকার বিরোধের সুযোগ নিয়ে বনু খুযা’আহ ও বনু বাকর অসহযোগিতার পথ অবলম্বন করলে কুসাই তাঁদের ভয় প্রদর্শন করে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন। কিন্তু এ দু’গোত্রের লোকজন তাঁর কথার কোন গুরুত্ব না দিয়ে যুদ্ধ ঘোষণা করে বসেন। এভাবে উভয় পক্ষই এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়েন। এ যুদ্ধে উভয় পক্ষেরই বহু লোকজন হতাহত হয়। 

জানমালের প্রভূত ক্ষয়-ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে আপোষ-নিষ্পত্তির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্যে শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যেই আগ্রহ পরিলক্ষিত হয় এবং উভয় পক্ষই একটি চুক্তি সম্পাদনে সম্মত হন। এ লক্ষ্যে বনু বাকর গোত্রের ‘ইয়ামার বিন আওফ’’ নামক এক ব্যক্তিকে মধ্যস্থতাকারী মনোনীত করা হয়। সমস্যার সকল দিক পর্যালোচনা করে তিনি রায় দেন যে, মক্কার শাসন এবং খানায়ে ক্বাবা’হর অভিভাবকত্বের ব্যাপারে খুযা’আহর তুলনায় কুসাই অধিকতর যোগ্যতার অধিকারী। অধিকন্তু তিনি আরও ঘোষণা করেন যে, এ যুদ্ধে কুসাই যত রক্তপাত ঘটিয়েছেন তার সবই অর্থহীন এবং পদদলিত বলে ঘোষণা করছি। তাছাড়া এ সিদ্ধান্তও ঘোষিত হল যে, খুযা’আহ ও বন্ধু বাকর যে সকল লোকজনকে হত্যা করেছেন তাঁদের জন্য দিয়াত প্রদান এবং খানায়ে ক্বাবা’হর অভিভাবকত্ব অকুণ্ঠচিত্তে কুসাইয়ের হাতে সমর্পণ করতে হবে। সেই বিচারের রায়ের কারণে ইয়ামারের উপাধি হয়েছিল ‘শাদ্দাখ’[17]। শাদ্দাখ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ‘পদ দলিতকারী ব্যক্তি’’।

এ আপোষ-নিষ্পত্তি এবং চুক্তির ফলে মক্কার উপর কুসাই ও কুরাইশদের পূর্ণ কর্তৃত্ব লাভ সম্ভব হয় এবং বায়তল্লার ধর্মীয় নেতার মহা-সম্মানিত পদটিও কুসাই লাভ করেন। এর ফলে খানায়ে ক্বাবা’হ পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে আরবের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত লোকজনদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক স্থাপিত হতে থাকে। মক্কার উপর কুসাইয়ের আধিপত্যের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল খ্রীষ্টিয় পঞ্চম শতকের মধ্যভাগে, অর্থাৎ ৪৪০ খ্রীষ্টাব্দের কোন এক সময়ে [18]।

মক্কার শাসন ক্ষমতা লাভের পর কুসাই শাসন ব্যবস্থার কিছুটা সংস্কারমুখী কাজকর্মের দিকে মনোনিবেশ করেন। মক্কার আশপাশে বসবাসরত কুরাইশগণকে মক্কায় নিয়ে এসে তিনি পুরো শহরটাকে তাঁদের মধ্যে বন্টন করে দেয়ার মাধ্যমে প্রত্যেক বংশের লোকজনদের বসবাসের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেন। তবে যাঁরা মাসকে আগে পিছে করতেন তাঁদের, এমন কি আলসফওয়ান, বনু আদওয়ান এবং বনু মুররা বিন আওফ প্রভৃতি গোত্র সমূহের লোকজনদের তাঁদের স্ব-স্ব পদে রাখেন। কারণ, কুসাই মনে করতেন যে, এ সকল কাজকর্মও ধর্মকর্মের অন্তর্ভুক্ত এবং এ সব ব্যাপারে রদ-বদল সঙ্গত নয়[19]।

কুসাইয়ের সংস্কারমুখী কর্মকান্ডের এটাও একটি উল্লে­খযোগ্য বিষয় ছিল যে, তিনি ক্বাবা’হ হারামের উত্তরে দারুন নাদওয়া স্থাপন করেন (এর দরজা ছিল মসজিদের দিকে)। দারুন নাদওয়া ছিল প্রকৃতই কুরাইশদের সংসদ সেখানে গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লে­খযোগ্য বিষয়াদির বিচার-বিশে­ষণ করা হতো। কুরাইশদের জন্য এটা ছিল একটি অত্যন্ত কল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠান।

করাণ, এ দারুন নাদওয়াই ছিল তাঁদের ঐক্যের প্রতীক এবং এখানেই তাঁদের বিক্ষিপ্ত ও বিতর্কিত সমস্যাবলী ন্যায়সঙ্গত উপায়ে মীমাংসিত হতো[20]।

কুসাইয়ের শ্রেষ্ঠত্ব ও দলনেতৃত্বের প্রেক্ষাপটে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বসমূহ পালনের অধিকার তিনি লাভ করেনঃ

১. দারুন নাদওয়ার অধিবেশনের সভাপতিত্ব : এ সকল অধিবেশনে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি সম্পর্কে পরামর্শ করার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হতো। সেখানে সমাজের লোকজনদের কন্যাদের বিবাহ-শাদীর আয়োজনও করা হতো।

২. লিওয়া : অর্থাৎ যুদ্ধের পতাকা কুসাইয়ের হাতেই বেঁধে রাখা হতো।

৩. ক্বিয়াদাহ : এটা হল কাফেলার নেতৃত্ব দেয়া। মক্কার কোন কাফেলা ব্যবসা বা অন্য কোন উদ্দেশ্যেই হোক তার অথবা তার সন্তানদের নেতৃত্ব ছাড়া রওয়ানা হতো না।

৪. হিজাবাত : এর অর্থ হচ্ছে খানায়ে ক্বাবা’হর রক্ষণাবেক্ষণ। কুসাই নিজেই খানায়ে ক্বাবা’হর দরজা খুলতেন এবং আনুষঙ্গিক যাবতীয় দায়-দায়িত্ব তিনি নিজেই পালন করতেন।

৫. সিক্বায়াহ : এর অর্থ হচ্ছে পানি পান করানো। হজ্জযাত্রীদের পানি পান করানোর একটা সুন্দর রেওয়াজ প্রচলিত ছিল। এ উদ্দেশ্যে জলাধার বা চৌবাচ্চায় পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকত। সেই পানিতে পরিমাণ মতো খেজুর ও কিসমিস দিয়ে বেশ সুস্বাদু পানীয় বা শরবত তৈরি করা হতো। হজ্জযাত্রীগণ মক্কায় আগমন করলে তিনি তাঁদের সেই পানীয় পান করাতেন[21]।

৬. রিফাদাহ : অর্থাৎ হজ্জযাত্রীদের মেহমানদারিত্ব। হজ্জযাত্রীগণের আপ্যায়ন ও মেহমানদারীর জন্য খাদ্যদ্রব্য তৈরী করে খাওয়ানোর একটা রেওয়াজও প্রচলিত ছিল। এ উদ্দেশ্যে কুসাই কুরাইশগণের উপর একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা নির্ধারণ করে তা সংগ্রহ করতেন। সংগৃহীত অর্থের সাহায্যে খাদ্যদ্রব্য তৈরী করে আর্থিক দিক দিয়ে অসচ্ছল কিংবা যাঁদের নিকট খাদ্যবস্তু থাকত না এমন সব হজ্জযাত্রীদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হতো[22]।

উল্লে­খিত কাজকর্মগুলো প্রত্যেকটি ছিল উচ্চমার্গের সম্মানের প্রতীক এবং কুসাই ছিলেন এ সবের প্রতিভূ। কুসাইয়ের প্রথম পুত্রের নাম ছিল আবদুদ্দার। কিন্তু তা সত্ত্বেও কুসাইয়ের জীবদ্দশাতেই দ্বিতীয় পুত্র আবদে মানাফ সম্মান ও নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হন।

এ কারণে কুসাই তাঁর পুত্র আব্দুদ্দারকে বললেন, যদিও কেউ কেউ সম্মান ও নেতৃত্বের ব্যাপারে তোমার চাইতেও অধিক মর্যাদাসম্পন্ন রয়েছে তবুও তোমাকে আমি কোনভাবেই খাটো করে রাখতে চাইনা। আমি চাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে তুমি তাঁদের সমকক্ষ হয়ে থাকবে। এ আশ্বাসের প্রেক্ষিতে প্রথম পুত্র আব্দুদ্দারের অনুকূলে তাঁর নেতৃত্বেও সম্মানের বিষয়গুলো অসিয়ত করেছিলেন। অর্থাৎ দারুন নাদওয়ার অধিবেশনে সভাপতিত্ব করার অধিকার, খানায়ে ক্বাবা’হর রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার, যুদ্ধের পতাকা বহনের অধিকার, হজ্জযাত্রীগণকে পানি পান করানো, হজ্জযাত্রীগণের মেহমানদারীর দায়িত্ব ইত্যাদি সব কিছুরই অধিকার আব্দুদ্দারকে অসিয়ত করলেন। কুসাই ছিলেন খুবই উন্নত মানের ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নেতা। কাজেই, কেউ কখনো তাঁর বিরোধিতা করত না এবং তাঁর কোন প্রস্তাব কিংবা সিদ্ধান্ত কেউ কখনো প্রত্যাখ্যানও করত না। তাঁর মৃত্যুর পরও ধর্মের অন্তর্ভুক্ত করণীয় কর্তব্য বলে মনে করা হতো। এজন্য পুত্রগণ তাঁর মৃত্যুর পরেও দ্বিধাহীন চিত্তে অসিয়তগুলো মেনে চলেছিলেন।

কিন্তু আবদেমানাফ যখন ইনতেকাল করলেন তখন তাঁর পুত্রগণ উল্লেখিত পদ সমূহের ব্যাপারে আব্দুদ্দারের সন্তানের সঙ্গে রেষারেষি আরম্ভ করলেন। যার ফলে কুরাইশগণ দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়লেন এবং দু’দলের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিল। কিন্তু ভয়াবহ পরিণতির কথা চিন্তা করে উভয় পক্ষই সংযম প্রদর্শন করে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হন। এ চুক্তির ফলে নেতৃত্ব ও মান মর্যাদার বিষয়গুলো উভয় পক্ষের মধ্যে বন্টিত হয়ে গেল। সিক্বায়াহ ও রিফাদাহ ও ক্বিয়াদাহ এ পদ তিনটি দেয়া হল বনু আবদে মানাফকে। দারুননাদওয়ার সভাপতিত্ব, লেওয়া ও হেজাবাতের দায়িত্ব বনু আব্দুদ্দারের হাতেই রয়ে গেল।

বলা হয়ে থাক, দারুন নাদওয়ার দায়িত্বে উভয় গোত্রই শরীক ছিল। বনু আবদে মানাফ আবার তাঁদের প্রাপ্ত পদগুলোর জন্য নিজেদের মধ্যে লটারী করলেন। ফলে সিক্বায়াহ ও রিফাদাহ আবদে শামস এর ভাগে পড়ে। তখন থেকে হাশিমই সিক্বায়াহ ও রিফাদাহ এ দুটি বিষয়ে নেতৃত্ব দান করতে থাকেন এবং তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। হাশিমের মৃত্যু হলে তাঁর সহোদর মুত্তালিব বিন আবদে মানাফ তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। কিন্তু মুত্তালিবের পর তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র আব্দুল মুত্তালিব (যিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দাদা) এ পদের অধিকর্তা হিসেবে কাজ করতে থাকেন। এমন কি যখন ইসলামের যুগ আরম্ভ হলো তখন আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।[23] বলা হয়, কুসাই পদসমূহ তার সন্তানদের মাঝে বন্টন করেন। অতঃপর তাদের সন্তানগণ উল্লেখ বর্ণনানুসারে পদসমূহের উত্তরাধীকারী হয়। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।

এতদ্ব্যতীত আরও কিছু সংখ্যক পদ ছিল যা কুরাইশরা নিজেদের মধ্যে বিলিবন্টন করে নিয়েছিলেন। সেই সকল পদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ড পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কুরাইশগণ একটি ছোট রাষ্ট্র, বরং বলা যায় যে একটি রাষ্ট্রমুখী সমাজ কাঠামো প্রবর্তন করে নিয়েছিলেন। বর্তমানে সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় যে গণতান্ত্রিক ধারা অনুসৃত হয়ে থাকে কতটা যেন সেই ধাঁচ ও ছাঁচের প্রশাসনিক কাঠামো ও সমাজ ব্যবস্থা তৎকালীন মক্কায় গড়ে তোলা হয়েছিল। যে পদগুলোর কথা ইতোপূর্বে বলা হল সে পদগুলো হচ্ছে যথাক্রমে নিম্নরূপ :

১. ঈসার : এতে ভবিষ্যৎ কথনধারা নিরূপণ এবং ভাগ্য নির্ণয়ের জন্য মূর্তির পাশে রক্ষিত তীরের মালিকানার ব্যবস্থা ছিল। এ পদের অধিকর্তা ছিলেন বনু জুমাহ।

২. ধন-সম্পদের ব্যবস্থাপনা : মূর্তির নৈকট্য লাভের জন্য যে কুরবানী এবং মানত বা মানসী উৎসর্গ করা হতো এ হচ্ছে তারই ব্যবস্থাপনা। বিবাদ বিসম্বাদ এবং মামলা মোকদ্দমা মীমাংসার ব্যাপারটিও ছিল এর সঙ্গে সংশি­ষ্ট। এ সংক্রান্ত দায়িত্ব অর্পিত ছিল ‘বনু সাহম’ গোত্রের উপর।

৩. শূরা : এ সম্মানের সঙ্গে সংশ্লি­ষ্ট গোত্র ছিলেন বনু আসাদ।

৪. আশনাক : এ অধিদপ্তরের কাজ ছিল শোনিতপাতের খেসারত এবং জরিমানার ব্যবস্থা। এর দায়িত্ব অর্পিত ছিল বনু তাইম গোত্রের উপর।

৫. উকার : এর কাজ ছিল জাতীয় পতাকা ধারণ। এ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন বনু উমাইয়া গোত্র।

৬. কুব্বাহ : এ পদটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ অধিদপ্তরের দায়িত্ব-কর্তব্য ছিল সৈন্যদের শিবির স্থাপন এবং সৈন্য পরিচালনা। এ দায়িত্ব অর্পিত ছিল বনু মাখযুম গোত্রের উপর।

৭. সাফারাত : এ অধিদপ্তরের কর্তব্য ছিল পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা সংক্রান্ত কর্মকান্ড সম্পাদন। এর দায়িত্বপ্রাপ্ত গোত্র ছিলেন বনু আদী।[24]

[1] পয়দায়েশ মোজমুআ বাইবেল ২৫-১৭। [2] কালবে জাযীরাতুল আরব ২৩০-২৩৭ পৃঃ । ইবনে হিশাম ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধর থেকে কেবলমাত্র নাবিত্বকে নেতৃত্বদানের কথা উল্লে­খ করেছেন। [3] ইবনে হিশাম ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধর থেকে কেবলমাত্র নাবিত্বকে নেতৃত্বদানের কথা উল্লে­খ করেছেন। [4] কালবে জাযীরাতুল আরব ২৩০ পৃঃ। [5] রহমাতুল্লি­ল আলামীন ২য় খন্ড ৪৮ পৃঃ। [6] কালবে জাযীরাতুল আরব ২৩১ পৃঃ। [7] ইনি ঐ মুযায জুরহুমী নান যাঁর উল্লে­খ ইসমাঈল (আঃ)-এর ঘটনাতে আছে। [8] মাসউদী লিখেছেন যে, অতীতে পারস্যবাসীগণ খানায়ে ক্বা‘বার জন্য প্রচুর সম্পদ ও মোতি পাঠাতেন। সাসান বিন বাবুক সোনার তৈরি দুটি হরিণ, মুক্তার তরবারী এবং অনেক সোনা প্রেরণ করে। আমর সেই সবকে যমযম কূপে নিক্ষেপ করে দিয়েছিলেন। মুরাওাযযাহাব ১ম খন্ড ২০৫ পৃঃ। [9] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১১৪-১১৫ পৃঃ। [10] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ৪৪ ও ১১৯-১২০ পৃঃ। [11] ইয়াকুতঃ মাদ্দাহ মক্কা। [12] আল্লামা খুযরী মুহাযাবাত ১ম খন্ড ৩৫ পৃঃ। ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১১৭ পৃঃ। [13] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১১৭-১১৮ পৃঃ। [14] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১১৭-১১৮ পৃঃ। [15] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১১৭-১১৮ পৃঃ। [16] রহামাতুল্লিল আলামীন ২য় খন্ড ৫৫পৃঃ। [17] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১২৩-১২৪ পৃঃ। [18] কালবে জাযীরাতুল আরব ২৩২ পৃঃ। [19] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১২৫ পৃঃ [20] মহাযাবাত খুযরী ১ম খন্ড ৩৬ পৃঃ এবং আখবারুল কিরাম ১৫১পৃঃ। [21] মুহাযারাতে খুযরী ১ম খন্ড ৩৬ পৃঃ। [22] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১৩০ পৃঃ। [23] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১২৯-১৩২, ১৩৭, ১৪২, ১৭৮-১৭৯ পৃঃ। [24] তারীখে আবযুল কুরআন ২য় খন্ড ১০৪-১০৬ পৃঃ।

» আর রাহীকুল মাখতূম «

COMMENTS

Name

About Myself,3,Advice,1,Advice of Islam,2,Al-Hadith,1,Answers Mode,1,Bangla Funny Song,1,Bangla Waz,1,Bangladesh,2,Bank Insurance Info World,1,Biography,1,Business Directory,2,Collected Love Stories,3,Collected Stories,11,College Admission,1,Domain Invoice,1,Education Corner,2,ETC,1,Famous Quotes Collection,3,Friends SMS,3,General Knowledge,4,Islam - My Religion,6,ITInfoWorld.com,2,ITInfoworld.org Video,12,Knowledge World,3,Knowledge World Video,7,Life Style World,1,Link World,2,Make Money Online,1,Math,1,Miss You,1,Moral Story,9,Mst.Hoshneara Nishat (Writer),2,My Best Friend,1,My College Friend,6,My Dream,1,My Education,3,My Education Institution,5,My Expressions,1,My Favorite Art Gallery,1,my life,1,My Online Earning History,7,My Photos,4,My Plan,1,My Poems,6,My Rememberable Event,7,My School Friend,9,My Teacher,3,My Teachers Advice,1,My Visited Places,1,My Website,14,My words,4,My Works,5,Name of Writers,1,National Anthem Collection,1,Online Education Info World,2,Others Poems,2,Others Quotes,1,Photo Gallery,6,Picnic,2,Poetry,7,Prophecy,1,Questions Answers,3,Rahima Khatun,2,Reset Code,1,SEO Answers Mode,1,SEO Banks Info,1,SEO Link World,1,SEO Work,1,Short Story,1,Students Corner,1,Suman Roy Priyo (Writer),2,unLock Code Samsung,1,Ups and down in my life,7,Video,18,Whois Contact Information,1,আর রাহীকুল মাখতূম,16,গজল,1,
ltr
item
Mohi Uddin's Diary: হিজাযের নেতৃত্ব (الإِمَارَةُ بِالْحِيْرَةِ) Leadership of Hijaz
হিজাযের নেতৃত্ব (الإِمَارَةُ بِالْحِيْرَةِ) Leadership of Hijaz
Mohi Uddin's Diary
https://mohiuddins.blogspot.com/2022/12/leadership-of-hijaz.html
https://mohiuddins.blogspot.com/
https://mohiuddins.blogspot.com/
https://mohiuddins.blogspot.com/2022/12/leadership-of-hijaz.html
true
6449027487630792532
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy Table of Content